র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যুবরণকারী জেসমিনের ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

শেয়ার করুন

বিস্তারিত দেখুন নিচের ভিডিও লিংকে সেলিম উদ্দীনের প্রতিবেদনে…

র‌্যাব হেফাজতে মৃত্যুবরণকারী নওগাঁর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিন মস্তিষ্কের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে শকে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে অতিরিক্ত চাপের কারণে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়ার ফলে ভেসেল দুর্বল জায়গায় চাপ নিতে না পেরে ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

রক্তক্ষরণের কারণে শকে গিয়ে মারা গেছে বলে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন।

সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ময়নাতদন্তের এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. জামান নিশাত রায়হান ও মেডিক্যাল অফিসার ডা. তাজনীন জাহান।

ডা. কফিল উদ্দিন জানান, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ হয়েছে কারণ মস্তিষ্কের বটমে অনেকগুলো বেরি অ্যানরিজম নামে ডেভেলপমেন্ট ত্রুটি থাকে। মস্তিষ্কের বটমে অনেকগুলো রক্তনালীর সমন্বয়ে গঠিত। সেই রক্তনালীল সংযোগস্থলে দুইটি স্থান ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে শকে মারা গেছে। অতিরিক্ত চাপ থেকে ব্লাড প্রেসার বেড়ে গিয়ে এ ধরনের মৃত্যু হয়েছে। এটা একটা প্রাকৃতিক ঘটনা।

আর আঘাত পাওয়ার বিষয়ে কফিল উদ্দিন বলেন, কপালের বাম পাশে ছোট একটি ছিলা জখম পেয়েছি যার আকার হচ্ছে ২.৫ সেন্টিমিটার যা এক ইঞ্চিরও কম। কপালের তিনটি লেয়ারে সবচেয়ে উপরের লেয়ারের অংশটি ছিলে গেছে যার কারণে মৃত্যু হয়নি। এই আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়নি। আরেকটি জখম ডান হাতের কনুইয়ের ভেতরের দিকে ছোট একটা ফোলা জখম পেয়েছিলাম যার সাইজ ২ সেন্টিমিটার। মেডিকেল কেয়ারের সময় যখন ইনজেকশন দেওয়া হয় তখন ভেইন খুঁজে না পেলে একাধিক ইনজেকশন দেওয়ার চেষ্টা করলে এ ধরনের আঘাত তৈরি হয়। এজন্য আমরা অটোপসি রিপোর্টে বলেছি, এই জখমের কারণে তার মৃত্যু হতে পারে না।

নওগাঁর একটি ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন গত ২৪ মার্চ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হেফাজতে মারা যান। গত ২২ মার্চ বাড়ি থেকে হেঁটে অফিসে যাওয়ার সময় র‌্যাব-৫ এর একটি টহল দল তাকে তুলে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল ও রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ২৪ মার্চ রামেক হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সুলতানার মৃত্যুর একদিন আগে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার পরিচালক এনামুল হক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।