সাংবাদিক ইউসুফ আদনানের পিতার মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

শেয়ার করুন

বিস্তারিত দেখুন নিচের ভিডিও লিংকে সেলিম উদ্দীনের প্রতিবেদনে…

বেসরকারি টিভি চ্যানেল দীপ্ত টিভির রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি ও নবরুপ টিভির পরিচালক ইউসুফ আদনানের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

শনিবার বেলা দুইটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে সহ অসংখ্য গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের মৃত্যুতে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন, রাজশাহী টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক বার্তা জানানো হয়েছে।

শোক বার্তায় এমপি বাদশা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দুর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবঃ প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদের দুটি নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার প্রিয় কর্মস্থল দুর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং সেখানে তাকে দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং দুর্গপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি চৌকষ পুলিশের দল বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুস সামাদকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এছাড়া মরহুমের দ্বিতীয় নামাজের জানাজা রাত ৯ টায় তার জন্ম ভূমি পানানগর স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই তার পারিবারিক কবরস্থানে পিতামাতার কবরের পাশে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

তার নামাজের জানাজায় পুঠিয়া দুর্গাপুরের সংসদ সদস্য ডাক্তার মনসুর রহমান দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক নেতা তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ছাড়াও বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ অংশগ্রহণ করেন। মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের জীবনী ছিল বর্ণাঢ্যময় এবং তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।

উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার পানানগর গ্রামে ১৯৫০ সালের জানুয়ারির ১৩ তারিখে জন্মগ্রহন করেন। পিতা আলহাজ্ব হজরতুল্যা মন্ডল কৃষি বিভাগের একজন সহকারী অফিসার এবং মাতা হামিদা বানু গৃহীনি ছিলেন। তারা ছিলেন চার ভাই ও তিন বোন। তিনি ১৯৬৬ সালে দূর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২য় বিভাগে এসএসসি পাস করেন এবং পাবনা সরকারী মহাবিদ্যালয় থেকে ২য় বিভাগে বিএসসি পাশ করেন। ১৯৭৯ সালে রাজশাহী বি, এড কলেজ থেকে ২য় বিভাগে বি, এড পাশ করেন এই সময় তিনি রাজশাহী বি এড কলেজের জিএস নির্বাচিত হন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ দূর্গাপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। দূর্গাপুর উপজেলার মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪ সালে রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসাবে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭২ সালের জানুয়ারির এক তারিখ দূর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন এবং ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে অবসর গ্রহন পর্যন্ত কৃতিত্বের সাথে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। তার লিখা ইংলিশ ম্যাথড নামে একটি ইংরেজী গ্রামার বই ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়।